দি কোড অব হাম্বুরাবী

ব্যবিলনের রাজা হাম্বুরাবী (১৭২৮ খ্রিষ্টপূর্ব -১৬৮৬ খ্রিষ্টপূর্ব) অনুভব করেছিলেন যে সৃষ্টিকর্তাকে খুশী করার জন্য তার এই কোড অব ল’ লেখা প্রয়োজন। তিনি নিজেকে সৃষ্টিকর্তার ‘ আনুকুল্য প্রাপ্ত বান্দা ’ হিসেবে গণ্য করতেন। সৃষ্টিকর্তার অত্যন্ত প্রিয় ভাজন বান্দা হিসেবে রাজ প্রাসাদের সামনে স্থাপিত কেন্দ্রীয় স্তম্ভের উপরের অংশে সূর্য দেবতা শ্যামানের সামনে হাম্বুরাবীর বিশাল মূর্তি স্থাপন করা হয়েছিল। তাই তিনি কোন দেবতার উপাসনা করতেন কিনা তা নিয়েও মতভেদ রয়েছে।

এই আইনের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট হচ্ছে ভুল বা ত্রুটির কারণে অপরাধীর কোন ব্যাখ্যা দেওয়ার সুযোগ নেই। এমনকি ক্ষমা চাওয়ারও কোন সুযোগ নেই। এই আইন সর্ব সমক্ষে প্রকাশ্যে প্রদর্শন করা হতো। কাজেই আইন না জানার অজুহাতে কারও কোন অজুহাত তোলার সুযোগ ছিল না।

যদিও সেই সময়ে খুব অল্প মানুষই পড়তে লিখতে জানত। হাম্বুরাবী’র কোড অব ল’তে ২৮২টি আইন ছিল। তবে এই কোড অব ল’ এর ১৩ ও ৬৬-৯৯ পর্যন্ত ধারাগুলো খুঁজে পাওয়া যায়নি। প্রাচীন ব্যবিলনে ৮ ফুট লম্বা একটি কালো ব্যাসাল্ট পাথরের উপর এই আইনগুলো খোদিত করা ছিল। এটি ইরানের সুসার খুজেস্থান নামক স্থানে ১৯০১ সালের ডিসেম্বর মাসে আবিষ্কৃত হয়েছিল।

হাম্বুরাবী’র কোড অব ল’ পৃথিবীর প্রাচীনতম আইন হিসেবে এর উপর ব্যাপক আলোচনা,সমালোচনা ও গবেষণা হয়েছে। এই কোড অব ল’ এর কিছু সীমাবদ্ধতা ও দ্বান্দ্বিকতা থাকলেও প্রাচীনতম আইন হিসেবে এই কোড অব ল’এর কিছু কিছু কোড রীতিমত বিস্ময়কর এবং বর্তমানের প্রচলিত আইনের উপর প্রাধান্য পাওয়ার উপযোগী। বিশেষ করে সেই সময়েও শ্রমজীবি মানুষের জন্য মজুরী এমনভাবে নির্ধারিত ছিল যে কাউকে ঠকানোর কোনো সুযোগ ছিল না।